প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ – বই রিভিউ – বইটি পড়বেন যে কারণে

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ – বই রিভিউ – বইটি পড়বেন যে কারণে

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ – সম্প্রতি সময়ে সবচাইতে বেশী আলোচিত বইয়ের একটি। সমাজে বিশ্বাসীদের আর অবিশ্বাসীদের মধ্যে কথার দ্বন্দ লেগে আছে বহু বহু বছর থেকে। কেউ যখন বিশ্বাস করে যে ধর্ম মানব রচিত, কেউ তখন বিশ্বাস করে ধর্ম স্রষ্টা প্রদত্ত। বিশ্বাসীদের আটকে দেবার মত কিছু প্রশ্ন অবিশ্বাসীরা সব সময় পকেটে নিয়ে ঘুরে। যখন যেখানে সুযোগ মিলে, বিশ্বাসীদের ঘায়েল করবার জন্য এই মারাত্মক প্রশ্ন গুলি ছুড়ে দেওয়া হয়। তেমনই কিছু প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে এই বইতে।

প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ কে?

মূলত বইয়ের লেখা গুলিকে গল্প আকারে সাজিয়ে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, যেখানে সাজিদ নামে একজন বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন উত্তর দিয়ে অবিশ্বাসীদের বিশ্বাসে ফাঁটল ধরাবার চেষ্টা করেছেন, তিনিই প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ।

‌কি আছে বইয়ে?

বইটিতে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, তার মধ্যেঃ ‘তাকদির বনাম স্বাধীন ইচ্ছা’, স্রষ্টা কেন মন্দ কাজের দায় নেন না, স্রষ্টাকে সৃষ্টি করলো কে, রিলেটিভিটির গল্প, জাহান্নাম কেন, ডিএনএ’র জবানবন্দী সহ বিভিন্ন বিষয় কথা বলা হয়েছে।

আমি কেন প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ বইটি পছন্দ করি?

বইয়ের অনেক গুলি লেখা বা যুক্তি সম্পর্কে আগে থেকেই ধারণা ছিলো, বা পড়া ছিলো। তারপরও অনেক নতুন জিনিষ সামনে এসেছে। আমার সবচাইতে মজা লেগেছে যেই বিজ্ঞানের দোহাই বা যুক্তি দিয়ে সব সময় ধর্ম তথা কোরআনের বিভিন্ন ভুল ধরবার চেষ্টা করা হয়, সেই বিজ্ঞান যে ক্ষণেক্ষণে পরিবর্তিত হয়, থিউরি গুলি ভুল প্রমানিত হয়, ধারণা পাল্টে যায় সেটা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখানো হয়েছে। চোখের পরেই এটা সব সময় ছিলো, কিন্তু কখনও সেভাবে চিন্তা করি নাই।
বইটিতে অনেক জায়গাতেই টেকনিক্যাল অনেক কিছুই বলা হয়েছে, তবে সেগুলি বেশ সহজ সাবলীল ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, যাতে অনেকেরই বুঝতে সুবিধা হবে। “স্রষ্টা কি এমন কিছু সৃষ্টি করতে পারেন, যা তিনি নিজেই তুলতে পারেন না?” এমন একটা ভ্যাজাল প্রশ্নের উত্তর তথাকথিত বিজ্ঞান মনস্কেরা সব সময় হ্যাঁ অথবা না উত্তর চায়, যেটা আসলে হ্যাঁ বা না দিয়ে দেওয়ার মত নয়। এটা থেকে প্রথম ধোপে টেকার একটা টেকনিকও বইতে বাৎলে দেওয়া হয়েছে।
তবে বইটি পড়ে শেষে যেটা বলা যায়, যার যার বুঝ, তার তার তরমুজ। আমার কাছে কেন যেন মনে হয় বাংলাদেশের প্রায় অবিশ্বাসীরাই আসলে অবিশ্বাসী নয়, তারা আসলে “ইসলাম” বিরোধী। হয়ত বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম, তবে বাংলাদেশে এমনটাই হয় বলে আমার বিশ্বাস। আর তাই, যারা বুঝতে চায় না, তারা কখনও বুঝবে না। কোরআনে তাদের সম্পর্কে বলেই দেওয়া হয়েছে যে তাদের অন্তরকে মোহর করে দেওয়া হয়েছে (এ বিষয়েও এই বইতে একটা চ্যাপ্টার আছে)।
এক বড় ভাই জিজ্ঞাসা করেছিলেন, “প্যারাডক্সিকাল সাজিদ ! দেখি বেশ আলোচিত বই ! এর বিষয় বস্তু কি ?” উত্তরে বলেছিলাম, “এইতো, তেমন কিছু না, কিছু প্রশ্ন, যা করে নাস্তিকেরা মনে মনে হাসে, তার উত্তর, যা পড়ে আস্তিকেরা মনে মনে হাসে”। দিন শেষে বিষয়টা তেমনই।
তবে, আপনি বিশ্বাসী হোন বা অবিশ্বাসী হোন, বইটি একবার পড়া উচিৎ। চিন্তার খোরাক পাবেন নিশ্চিত।

২০১৭ সালে একটি টার্গেট নিয়েছিলাম, অন্তত ৪০টা বই এ বছর পড়বো। আর এখন প্রতিটা বই পড়ে পড়ে রিভিউ লিখছি। যদি কেউ আগের পড়া বই গুলির রিভিউ পড়তে চান, এখানে দেখতে পারেনঃ বই রিভিউ

 

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

থাই লটারি কিভাবে খেলবেন

লটারি জেতার কার্যকরী কৌশল জানেন কি?টিপস ও ট্রিকস

এডোবি ফটোশপ কিবোর্ড শর্টকাট