পোলাপাইনের বাড়ি ছাইড়া পলানো ঠেকান!

পোলাপাইনের বাড়ি ছাইড়া পলানো ঠেকান!

 

পোলাপাইনের বাড়ি ছাইড়া পলানো ঠেকান! কেননা আজকে যে পোলা বাড়ি থেকে পলায়, কালকে সেই পোলাই আপনার গলার কাঁটা হইয়া যাইবো! আমি মফস্বলে বড় হয়েছি, এবং কিছু পরিবারের খুব কাছ থেকে দেখেছি যে তাদের পোলাপাইন সুযোগ পাইলেই খালি বাড়ি থেকে পালায়! রেজাল্ট খারাপ হয়েছে, পালাও! বাপের পকেট থেকে টাকা চুরি করে ধরা পড়েছে, পালাও! ঘরে ভালো লাগতেছে না, তাও পালাও! পালাইলেই মজা, বেশী আদর পাওয়া যায়!
যে সব বাড়ির পোলাপাইন বাড়ি থেকে ঘন ঘন পালায় তাদের ঘটনাবলী যদি একটু লক্ষ্য করেন, তাহলে নিচের জিনিষ গুলি খুব চোখে পড়বেঃ
  • বাড়িতে মা/বাবা/দাদা/দাদী বা কেউ না কেউ ঐ সন্তানকে চরম আকারে আদর করে, এবং তার সব দোষত্রুটিতে তারই পক্ষ নেয়, সাথে সাথে কেউ তাকে কিছু বললে তার বিপক্ষে যায়। এক কথায় প্রচন্ড পরিমানে লাই পায়!
  • বাড়িতে অতিরিক্ত শাসন আছে, কিন্তু সঠিক শাসন নাই। হয়ত কাউকে মেরে এসেছে, কিন্তু কিচ্ছু বললো না, আর এদিকে হাত থেকে পড়ে গ্লাস ভেঙ্গেছে আর তারে মারতে মারতে শ্যাষ করে করে দশা।
  • একবার বাড়ি ছেড়ে পালানোর পর ফিরে আসলে তারে “ওরে আমার বাবা ফিরে আসছেরে” বলে জড়িয়ে ধরে মরা কান্না শুরু, পর পর কয়েকদিন ডাবলের উপরে ডাবল জামাই আদর, যা চায় তাই পায় অবস্থা করে বাবা-মা।
  • পোলাপাইন গুলা ইচ্ছা স্বাধীন মত যেখানে সেখানে ঘুরে, চাইলেই ‘যেখানে রাত, সেখানে কাৎ’ টাইপের অবস্থা করতে পারে এবং বাপ মা কিছু বলেও না, করেও না!
এমন আরও কমন কিছু জিনিষ খুঁজে পাওয়া যায়। তো, আসেন, এটার সহজ সমাধান নিয়ে কথা বলবো। বিষয়টা বেশ rude শুনাইতে পারে, কিন্তু trust me, it works!
  • করণীয়ঃ প্রথমবার যখন পরিবারের কেউ বাড়ি ছেড়ে পলাবে, সে ফিরে আসবার পর যাতে এলাকাতেই ঠিক মত ঢুকতে না পারে সেই ব্যবস্থা করা! এলাকার সব পোলাপাইনরে দরকার হলে টাকা দিয়ে ওর পিছে লাগায় দিতে হবে যেন এলাকার ধারে কাছে ভিড়তে না পারে।
    • উপকারিতাঃ এতে করে ও বুঝবে যে এই আকাম আবার করলে আমার বাড়িতো দূরে থাক, এলাকাতেও ঠাই হবে না।
  • করণীয়ঃ কাছের সকল আত্মীয় স্বজনকে সতর্ক করে দিতে হবে যেন কেউ ওকে আশ্রয় না দেয়। এবং যদি কেউ দেয়, তার নামে অপহরণের মামলা করতে হবে। যদি সতর্ক করবার পরও কেউ আশ্রয় দেয়, তার নামে সত্যিই ফুসলিয়ে অপহরণের মামলা করে দিবেন।
    • উপকারিতাঃ পোলাপাইন সাধারণত কিছু টাকা নিয়া পালায়, তারপর পরিচিত মানুষদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে। তাদের রিকোয়েষ্ট করে করে বাড়ি ফিরে। পরিচিতরাও মনে করে কত বড় উপকার করলাম সেই হিসাবে ঠাই দেয়, আর ফলে পোলাপাইন বুঝে দাড়াবার জায়গা আছে, আবার পালানো যাবে। কিন্তু আপনি একবার যদি কেস করেন, পরে ঐ পোলাপাইন আর পরিচিত কারও বাসায় ঠাই পাবে না। এবং ফলাফল স্বরূপ বাড়ি চলে আসবে এবং পরবর্তিতে পালাবে না।
  • করণীয়ঃ আদর আপ্যায়ন সব বন্ধ! হুম, সব বলতে সব। সাধারণত বাবা-মা ছেলে/মেয়ে যা না খেতে চায় তা তার সামনে দেয় না। কিন্তু এক্ষেত্রে উল্টা করতে হবে। ভাত মাছ সবজী না খায়, তার সামনে ঠেলে দিতে হবে। এবং প্রতিবার তাকে বুঝাইতে হবে যে এইটা তার জন্য শাস্তি!
    • উপকারিতাঃ ফিরে আসলে অপছন্দের খাবার খেতে হবে, এই ভয়ে হলেও অনেকে পালাবার রাস্তা খুঁজবে না!
থাক, আর উপদেশ না দেই। শেষে না শিশু নির্যাতনের মামলা খাই! যাই হোক, সবাই দয়া করে পোষ্টের ক্যাটাগরীটা দেখবেন। এটা মজাই মজা  ক্যাটাগরীতে লেখা। সেই হিসাবে সিরিয়াসলী নেবার কিছু নাই! তবে হ্যাঁ, এটা সত্য যে উপরের নিয়ম অনুসরণ করে সাফল্যের মুখ দেখেছেন এমন পরিবার আমি নিজেই দেখেছি।
শেষে একটা গল্প বলে শেষ করি। একবার, মাত্র, শুধুমাত্র একবার আম্মারে বলছিলাম, “থাকবো না এই বাড়ি”; ব্যাস, দিলো আম্মা বের করে! সকাল ১১টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বাড়ির গেটের কাছে বসে কান্নাকাটি করতে করতে তারপর ঘরে ঢুকতে অনুমতি পাইছিলাম। তারপরও আম্মা ঠিক মত কয়দিন কথা কয় নাই। জীবনে বহুত কিছু করতে মন চাইছে, কিন্তু বাড়ি ছেড়ে যাবো, এই কথা বলবার সাহস এই ৩০ বছর বয়সে এসেও হয় না। যদি আবার গেটে বসে কান্নাকাটি করা লাগে!

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

থাই লটারি কিভাবে খেলবেন

লটারি খেলার সময় কোন সংখ্যাকে গুরুত্ব দেবেন, জেনে নিন

এডোবি ফটোশপ কিবোর্ড শর্টকাট